মধ্য আফ্রিকার দেশ ডেমোক্র্যাটিক রিপাবলিক অব কঙ্গো (ডিআর কঙ্গো) থেকে শান্তিরক্ষা মিশনের সব সদস্যকে সরিয়ে নিচ্ছে জাতিসংঘ। ২০২৪ সালের শেষ দিকে সদস্যরা দেশটি ছেড়ে যাবে।

আল জাজিরার রোববারের (১৪ জানুয়ারি) প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাতিসংঘ মোট তিন ধাপে তাদের সেনা প্রত্যাহার করে নেবে। চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে দেশটি থেকে পুরোপুরি সেনা প্রত্যাহার করা হবে।

গত ২০ বছরের বেশি সময় ধরে ডিআর কঙ্গোয় বিদ্রোহীদের সঙ্গে লড়াই করে আসছিল বিভিন্ন দেশের সেনা সদস্যদের মাধ্যমে গড়া জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনের সেনাদল।

জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনটি কঙ্গোয় পরিচিত মনুস্কো নামে। মিশনের প্রধান বিন্টো কেইতা। তিনি গতকাল শনিবার কঙ্গোর রাজধানী কিনশাসায় মিডিয়া ব্রিফিং করেন। সেখানে বিন্টো বলেন, ২৫ বছরের ধরে দায়িত্ব পালন করা মনুস্কো অবশ্যই ২০২৪ সালের শেষের দিকে ডেমোক্র্যাটিক রিপাবলিক অব কঙ্গো ত্যাগ করবে।

তিন ধাপের প্রথম পর্যায়ে, চলতি বছরের এপ্রিলের শেষ দিকে ২ হাজার সৈন্য কঙ্গোর কিভু প্রদেশ থেকে সরে যাবে। কেইতা বলেন, কঙ্গোয় আমাদের মনুস্কোর ১৩ হাজার ৫০০ জনের শক্তিশালী সৈন্য কাজ করছে। প্রথম পর্যায় সৈন্য সংখ্যা চলে গেলে বর্তমান সংখ্যা হবে ১১ হাজার ৫০০ জন। এরপর নর্থ কিভু ও ইতুরি প্রদেশ থেকে বাহিনী প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে।

সম্প্রতি নির্বাচন হয় কঙ্গোয়। বিতর্কিত এ ভোটে পুনঃনির্বাচিত হয় কঙ্গোলিজ সরকার। পরে সরকারের পক্ষ থেকে জাতিসংঘের মিশনকে সরে যাওয়ার আহ্বান জানায় দেশটির সরকার। এরপরই মনুস্কোর পক্ষ থেকে কঙ্গো ছেড়ে যাওয়ার ঘোষণাটি এলো।

খবরে বলা হয়েছে, জাতিসংঘের মিশনটি সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর হাত থেকে বেসামরিক নাগরিকদের রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে। মূলত ২০২২ সাল থেকে জাতিসংঘের মনুস্কো মিশন দেশটির নাগরিকদের প্রতিবাদের সম্মুখীন হয়েছে। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, শান্তিরক্ষীরা বহু বছরের মিলিশিয়া সহিংসতার বিরুদ্ধে বেসামরিক নাগরিকদের রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে।

জাতিসংঘের সৈন্য চলে গেলে কিভু প্রদেশে সংস্থাটির ১৪টি ঘাঁটি কঙ্গোর নিরাপত্তা বাহিনী দখলে নেবে। কঙ্গোর পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিস্টোফ লুতুন্ডুলা কিনশাসায় এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, মনুস্কো প্রত্যাহারের অর্থ এমন নয় যে আমরা আমাদের দেশের স্বার্থে যে লড়াইয়ে নেমেছি তা শেষ হয়ে যাবে। বরং আমাদের সংগ্রাম চলবেই।